
Mobile merits and demerits, আজকাল প্রায় সবার হাতেই স্মার্টফোন রয়েছে।স্মার্ট ফোন আসাতে মানুষ সবকিছু একপ্রকার হাতের মুঠোয় পেয়ে গেছে।
Table of Contents
Toggleমোবাইলের সূচনা
মার্টিন “মার্টি” কুপার তারবিহীন টেলিফোন শিল্প হিসেবে মোবাইল ফোনের পথিকৃৎ । তার হাত ধরেই প্রথম স্মার্ট ফোন এর সূচনা হয়। ১৯৭৩ সালে তিনি মটোরোলা কোম্পানির জন্য একটি মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেছিলেন। এই ফোন সহজে যেকোনও স্থানে বহন করা এবং ব্যবহার করা যায় বলে এটির নামকরণ “মোবাইল ফোন” করা হয়েছে। বর্তমান সময়ের মানুষের কাছে মোবাইল হলো একটি অপরিহার্য ইলেকট্রিক যন্ত্র ।
এই মোবাইল ব্যবহার করে এখন মানুষ বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সঙ্গে সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারে। খুব সহজেই অডিও কল এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে আপনার আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এই হ্যাণ্ডসেটকে মোবাইল ফোন ছাড়াও সেলফোন, হ্যান্ড ফোন এবং মুঠোফোন হিসাবেও অভিহিত করা হয়।
মোবাইল ফোনের কিছু সুবিধাঃ
মোবাইল ফোনের অনেক সুবিধা রয়েছে। সহজেই যোগাযোগ করা, যেকোনো জায়গার ম্যাপ দেখা, ছবি তোলা, ভিডিও করা, ভিডিও দেখা, গান শোনা থেকে শুরু করে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে যেকোনো প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করা যায় মোবাইল ফোন দিয়ে। মোবাইল ফোনের সুবিধাগুলো নিচে তালিকা করে উল্লেখ করে দিলাম।
মোবাইল ফোনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হচ্ছে, পৃথিবীর যেকোনো স্থানে কোনো পরিশ্রম ছাড়াই মুহূর্তেই যোগাযোগ করা যায়। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের কারও সাথে যোগাযোগ করতে হলে কল দিয়ে কিংবা টেক্সট করে কথা বলা যায়। এছাড়াও, বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ।সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এখন ছবি/ ভিডিও/ভয়েস ক্লিপ আদান প্রদান করা সম্ভব এবং খুব সহজেইআপনি চাইলে যেকোনো সাইজের ফাইল মোবাইল এর মাধ্যমে শেয়ার করতে পারবেন ।
সব বিনোদন এখন মোবাইলের মাধ্যমেই পাওয়া যায় যেমন-গান শোনা, ভিডিও দেখা, সিনেমা দেখা। মোবাইল হওয়ার ফলে মানুষ এখন হলে গিয়ে মুভি/সিনেমা না দেখে মোবাইলে সিনেমা দেখছে। আগেকারদিনে একটি চিঠি পাঠিয়ে সেটি পৌঁছানোর জন্য কয়েকদিন সময় অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু, এখন মোবাইলের মাধ্যমে টেক্সট ম্যাসেজ বা ই-মেইল করে খুব সহজেই কম সময়ে চিঠি পাঠানো যায়।
বর্তমানে পড়াশোনার জন্যও মোবাইল ব্যবহার করা হয়। করোনা কালিন সময়ে ছাত্র ছাত্রীরা মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস করেছে। শিক্ষাখেত্রে মোবাইল ফোনের ব্যবহার এখন অনেক শিক্ষাকে উন্নত করে তুলেছে। আপনার হাতের মোবাইল দিয়ে ইউটিউব থেকে যেকোনো টপিকের উপর ক্লাস করতে পারবেন। এছাড়াও, আমাদের দেশের এবং বিশ্বের অনেক দেশের বিভিন্ন লারনিং প্ল্যাটফর্ম আছে,খুব সহজেই বাড়িতে বসে সেখানে থেকে যেকোনো বিষয়ের উপর জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।
মোবাইল ফোনের সুবিধাগুলো মাঝে সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে, আপনি চাইলে মোবাইল দিয়ে টাকা লেনদেন করতে পারবেন।এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করতে পারবেন। মোবাইল দিয়ে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে। ইন্টারনেট থেকে মোবাইল দিয়ে ছোট-বড় অনেক কাজ করে টাকা আয় করে বহু মানুষ। টাকা আয়ের উপায় গুলো হলো-ব্লগিং, ফ্রিল্যান্সিং, কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি।
মোবাইল ফোনের অসুবিধাঃ
মোবাইল ফোন আমাদের জন্য শুধু কল্যাণ বয়ে এনেছে তাই নয় কল্যানের সাথে মোবাইল ফোন কিছু অসুবিধা সঙ্গে নিয়ে এসেছে। প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা যেমন অনেক কাজ অনায়সে করতে পারি, তেমন এই প্রযুক্তি আমাদের জন্য অনেক ভয়াবহ দুর্যোগ ডেকে নিয়ে এসেছে। মোবাইল ফোনের অনেক সুবিধা থাকায়,অনেকেই মোবাইল ফোনের উপর বেশ আসক্ত হয়ে পড়ে। এর ফলে, শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে থেকে বের হওয়া নিল রশ্মি আমাদের চোখের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। দীর্ঘক্ষন যাবত মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে বা মোবাইল ব্যবহার করলে এটি আমাদের চোখের জন্য খুব খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। মোবাইল ফোনের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক বেশি উন্নত হওয়ার কারণে অন্যায়, দুর্নীতি, মিথ্যাচার অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার এই উন্নতির কারণে মোবাইল ব্যাবহার করে মানুষ অনেক অন্যায় কাজ করছে।
মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক আমাদের দেহের জন্য অনেক প্রচন্ড ক্ষতিকারক। মোবাইল নেটওয়ার্ক ২জি, ৩জি, ৪জি, ৫জি থেকে শুরু করে আরও উপরে অব্দি রয়েছে। এই মোবাইল নেটওয়ার্ক এর কারণে, প্রকৃতি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক আমাদের দেহের অনেক রোগের মূল কারণ। পাশাপাশি, এটি পাখী দের ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোবাইল ফোনে থাকা গেমের প্রতি আমাদের সমাজের অনেক ছেলে-মেয়ে আসক্ত হয়ে পডছে ফলে তাদের পড়ালেখা থেকে মনোযোগ উঠে যাচ্ছে। মোবাইল গেমে অর্থ ব্যয় করা সহ আরও অনেক অপকর্মে খুব সহজেই জড়িয়ে পড়ছে মানুষ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে সারাদিন নিজের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ বাদ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দিচ্ছে মানুষ। এর কারণে, সাধারণ জীবনধারা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি মানুষের সাথে মানুষের দূরত্ব বাড়ছে। মোবাইল ফোনের সুবিধা এবং অসুবিধা অনেক। মোবাইল ফোনের যেমন অনেক সুবিধা রয়েছে, তেমনি অনেক অসুবিধা রয়েছে। প্রযুক্তির সুবিধা এবং ভালো দিকগুলো গ্রহণ করে খারাপ দিকগুলো বর্জন করতে হবে। তবেই আমাদের সমাজ, দেশ, পৃথিবী ভালো থাকবে।