Basak pata
Basak-pata

Basak Pata: ঠান্ডা লাগা জ্বর কাশিতে ভুগছেন , বাসক পাতাতেই লুকিয়ে আছে সমাধান

Basak pata
Basak-pata

 Basak pata : গরম থেকে ঠান্ডা, ঠান্ডা থেকে গরম,  এই আবহাওয়া  পরিবর্তনের কারণে এ  মানুষের শরীরে নানা ধরনের সর্দি-কাশি জ্বর ইত্যাদি হয়েই থাকে । সর্দি কাশির সমস্যায় সেই আদ্যিকাল থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে বাসক পাতার রস।

এখনও আর্য়ুবেদেও ব্যবহার করা হয় এই পাতার। বাসক পাতা স্বাদে তেতো। বাসক পাতার একাধিক ওষুধি গুণও রয়েছে।বাসক পাতা হল এমন একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার শুধুমাত্র পাতাই নয়, মূল, ফুল, এবং আরও নানা অংশ ওষুধ তৈরির কাজে লাগে।  তাই আজকে আমরা দেখব বাসক পাতার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য  ও উপকারিতা

বাসক কথাটি অর্থ সুগন্ধকারক। এটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বাসকের অনেক গুণ।বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রস্তুতিতে এই বাসক পাতা  ব্যবহার করা হয় । বাসকের ছাল, পাতা, রস সবই উপকারী। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বাসক পাতাকে নানা রোগ সারাতে ব্যবহার করা হয়। সর্দি-কাশি  ও বংকালট্রিস  রোগের মহা ওষুধ বাসক, একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উদ্ভিদ।

এই গাছকে ঔষধি গাছ ও বলা হয় । এই গাছটি গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্য করা যায় ।  এটি একপ্রকারের স্থলজ উদ্ভি ।   গাছটি লম্বায় ১-১৫ মিটার (৩-৫ ফুট) পর্যন্ত হয়। কচি অবস্থায় গাছের গোড়া সবুজ হলেও পরিণত অবস্থায় হাল্কা বেগুনি রঙের মতো দেখায়। পাতাগুলি লম্বায় ৫-১২ সেন্টিমিটারের মতো হয়। ফুল সাদা রঙের এবং গুচ্ছাকারে ফোটে। ফলগুলি ক্যাপসুলের মতো দেখতে।

Basak-pata
Basak-pata

উপকারিতাঃ

বাসকের তাজা অথবা শুকনো পাতা ওষুধের  ঔষধি গুণে ভরপুর। বাসকের পাতায় ‘ভাসিসিন’ নামীর ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে। শ্বাসনালীর লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে দেয় বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহমূলক ব্যাধিতে  এই গাছের পাতাকে ঔষধি কাজে ব্যবহার করা হয়।

সর্দি কাশিতে এই গাছের পাতাকে ঔষধি কাজে  ব্যবহার করা হয় ।  বিশেষ করে এই গাছের পাতাকে গরম জলে ফেলে  ফুটিয়ে সেই জলকে পান করলে  সর্দি-কাশিতে ঔষধের মতো কাজ করে ।   তাছাড়াও এই গাছের পাতাকে কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় ।  তবে অধিক মাত্রায় খেলে বমি হয়, অন্তত বমির ভাব বা নসিয়া হয়, অস্বস্তি হয়।

সর্দি-কাশির নিরাময়েঃ 

আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সাথে বহু বাড়িতেই ঠান্ডা গরম লেগে সর্দি-কাশির সমস্যা দেখা যায়। শীতের শুরুর দিকে এই সর্দি কাশি সারাতে বাঙালি  ঘরে ঘরে ওষুধ যেন প্রচলিত ব্যবস্থা।  এই ওষুধকে দূরে সরিয়ে বাসক পাতাকে সর্দি কাশির যম বলে মনে করা হয়। দেখে নেওয়া যাক, এই বাসক পাতার কিছু গুণাগুণ।

টিবি-ব্রঙ্কাইটিসের নিরাময়েঃ 

বাসক পাতায় অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান টিবি-ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা  দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

বাতের ব্যাথায়ঃ 

বাতের ব্যথা রুখে দিতেও কাজে আসে বাসক পাতা। বাসক পাতার মধ্যে রয়েছে আরট্রাইটিস, যা গেঁটো বাত সহজে নিরাময় করতে সাহায্য করে। বাসক পাতা বেটে তার সঙ্গে হলুদ, চুন মিশিয়ে লাগাতে পারলেও এই ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ক্রনিক ঠাণ্ডা লাগা দূর করতেঃ 

যাঁদের ঠাণ্ডা লাগার ধাত রয়েছে তাঁরা রোজ সকালে ৪ টে বাসক পাতা ভাল করে ধুয়ে নিয়ে বেটে সেই পাতার রস করে খেতে পারেন। এবার এর সঙ্গে মিশিয়ে দিতে পারেন সামান্য মধু। রোজ সকালে খালি পেটে খেলে কফ-সর্দির সমস্যা অনেকটাই দূর হবে।

মাংস পেশিতে টান দূর করতেঃ

মাংস পেশিতে টান থেকে শুরু করে, ব্রণর সমস্যায় বাসক- বাসক পাতা ত্বককে ভালো রাখতেও সাহায্য করে। পেট অপিষ্কার জনিত কারণে যাঁদের ব্রণর সমস্যা হয়, তাঁরা এই বাসক পাতার রস খেলে পাবেন উপকার। এছাড়াও বাসক পাতা সেবনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, রক্ত পরিষ্কার রাখার মতোও উপকার মেলে।এছাড়াও মাংসপেশিতে টান ধরলে, চুন, হলুদ, বাসক পাতা বেঁটে তা ব্যথার জায়গায় লাগালে মেলে আরাম।

বাসক পাতার  রসের সঙ্গে  ১-২ চামচ   অথবা হাফ থেকে এক চামচ মধু-সহ  মিশিয়ে খেলে শিশুর সদির্কাশি উপকার পাওয়া যায়।  এবং যে সমস্ত শিশুর দ্রুত ঠান্ডা লাগার ধাত রয়েছে  সেই ঠান্ডা লাগার প্রতিকার করে বাসক পাতার রস । 

পাইরিয়া দাত ভালো রাখতেঃ

পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক পাতা থেঁতো করে ২ কাপ জলে সিদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ঈষদুষ্ণ অবস্থায় রেখে ওই জল দিয়ে  কুলকুচি করলে পাইরিয়া রোগ ভালো হয় এবং দাতে পকা লাগা ভালো হয় । 

হাঁপানির ভালো করতেঃ

যাঁদের হাঁপানির টান আছে তাঁরা বাসক পাতা শুকনো করে, ওই পাতা বিড়ি বা চুরুটের মতো পাকিয়ে, তার সাহায্যে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট প্রশমিত হ:এসএসএইচ

শরিরে দুর্গন্ধ দূর করতেঃ 

অতিরিক্ত গরমে যাদের গা ঘামে এবং গা থেকে দুর্গন্ধ বেরোয়  তারা  স্নান করার জলে  বাসক পাতা ফেলে  জল টা মৃদু উষ্ণ গরম করে  সেই জলে স্নান করলে  গায়ের দুর্গন্ধ ভালো হয় । 

বুকে কফ বের করতেঃ

যদি বুকে কফ জমে থাকে এবং তার জন্য শ্বাসকষ্ট হয় বা কাশি হয় তা হলে বাসক পাতার রস ১-২ চামচ এবং কন্টিকারী রস ১-২ চামচ, ১ চামচ মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে।

প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা দূর করতেঃ

প্রস্রাবে জ্বালা-যন্ত্রণা থাকলে বাসকের ফুল বেঁটে ২-৩ চামচ ও মিছরি ১-২ চামচ সরবত করে খেলে এই রোগে উপকার পাওয়া যায়।

চর্মরোগ ভালো করতেঃ 

 বিভিন্ন ধরনের  চর্মরোগ যেমন দাদ হাজা চুলকানি এগুলোর ক্ষেত্রে  আমরা হয়তো অনেকেই  ঔষধ ব্যবহার করে থাকি ,  কিন্তু নিয়মিত বাসক পাতা কে গরম দলের সঙ্গে ফুটিয়ে   সেই জল দিয়ে  রোগাক্রান্ত জায়গা কে পরিষ্কার করলে  চর্মরোগ ভালো হয় ,  অথবা বাসক পাতাকে  হেঁটে তার রস  ওই জায়গার উপর রাখলে  বিভিন্ন চর্ম  রোগ দূর হয় ,  এবং  ত্বক ভালো থাকে । 

 

 বাসক পাতা যেহেতু একটি ঔষধি গাছ  তাই আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে বাসক পাতা কে ব্যবহার করা ছাড়াও বাসক পাতা থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগের ওষুধ প্রস্তুত করা হয় ।  এই গাছের পাতা কি আপনি উপরিউক্ত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে পারেন ।  তবে  উপরে একটি পদ্ধতি অবলম্বন করার পরও যদি আপনি উপকৃত না হন অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেন । 

 

 নিজের স্বাস্থ্য ভালো রাখুন সুস্থ থাকুন ,  আমাদের এই ধরনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা  মুলক টিপস   পেতে এবং আরো বিভিন্ন ধরনের হেলথ টিপস পেতে আমাদের হোম পেজে  স্বাস্থ্য ট্যাবে ক্লিক করুন । 

 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *