Sobhan Baisakhi Update News
#image_title

Sobhan Baisakhi Update News: বিয়ের প্রস্তাব ছিল অনেক, মেয়েকে মানুষ করার কথা দিয়েছিল শোভন

Sobhan Baisakhi Update News

Sobhan Baisakhi Update News, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কে একাধিক সংবাদের শিরোনামে দেখা গেছে , তার প্রেমের গল্প নিয়েও সংবাদে বিভিন্ন রকমের চর্চাও দেখা গেছে ,বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রেমিকা সত্তা একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম দখল করেছে। 

তা নিয়ে বিতর্কও হয়েছেঅনেক। তবে প্রেমিকার বাইরে তাঁর মাতৃসত্তাও নানা ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। সেই সমস্ত কথা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরেছেন বৈশাখী ।

জীবনে গতানুগতির পথে উনি চলবেন না প্রথম থেকেই ঠিক করেছিলেন , তার জীবনের অনেক কিছু ঘটনার মধ্যে দিয়ে তার মেয়ের প্রতি ভালোবাসা ও স্নেহ যেন অন্য কিছুর সঙ্গে তুলনা করা যায় না।

আর মেয়ের সাথে প্রতারণা করার ইচ্ছে বা মানসিকতা তার কোনদিনই ছিল না। প্রত্যেক মায়ের ইচ্ছা তার মেয়ে তার নিজের মতো করে চলুক কিন্তু তাঁর একরত্তিটি ছোটবেলা থেকে নিষ্ঠুরতা দেখেছে। মেয়ে পৃথিবীতে আসার পরে চিড় ধরে যাওয়া দাম্পত্যকে আরও একটা সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন।

কিন্তু বছর যেতে না যেতেই তাঁর উপলব্ধি, ‘স্বার্থপর পুরুষ খারাপ স্বামী তো বটেই, বাবা হিসাবেও তারা খারাপ হয়।’ বর্তমানে পড়াশোনা, পুতুল আর কেকেআর-এর ম্যাচ নিয়ে মায়ের সুরক্ষিত ছত্রছায়ায় আনন্দে দিন কাটাচ্ছেন বৈশাখীর মেয়ে মহুল।

প্রাক্তন স্বামী মেয়ের সামনে বিকৃত যৌন কাজকর্ম করতে বাধ্য করতেন, জানালেন বৈশাখী। ‘মারধর খাওয়ার পরে সেই পুরুষের সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার মতো গ্লানি আর কিছুতে নেই’, সেই বিভীষিকাময় দিনগুলির সাক্ষী ছিল তিন বছরের কন্যা মহুল। ‘মহুলের বাবা বলেছিল, ‘আগে ডিএনএ টেস্ট করা, তার পরে তো বুঝব আমি বাবা”, অশ্রুভরা চোখে তাকালেন বৈশাখী।

মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের পথে পুরোপুরি সঠিক পদক্ষেপ করতে পেরেছেন এমনটা মনে করেন না বৈশাখী। রাখঢাক না রেখেই বললেন, ‘আমি খুব ভাল মা নই। ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা ভেবে অনেক সময় হিংস্র ভাবে লড়তে গিয়েছি। ভাবিনি সেই ঘটনার প্রভাব মেয়ের উপরে পড়বে।’

মেয়ের স্বপ্ন ডিজ়নিল্যান্ডে ঘুরতে যাবে। পরিকল্পনা মোতাবেক মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে যান বৈশাখী। কিন্তু পাসপোর্ট আটকে দেন প্রাক্তন স্বামী। বাবার ‘ভিজ়িটিং রাইট’ থাকার দরুণ মেয়ের বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাবার মত বাধ্যতামূলক। কিন্তু মত দেননি বাবা। পাসপোর্ট অফিস থেকে চোখের জলে বিদায় নিয়েছিলেন মা ও মেয়ে।

পরবর্তীকালে বাবাকে ফোন করে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি স্বরূপ স্বাক্ষরের জন্য অনুরোধ জানায় মহুল। প্রত্যুত্তরে মনোজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘কেন তোমার মায়ের তো খুব ক্ষমতাশালী সঙ্গী আছে। দেখি কী করে আমার স্বাক্ষর ছাড়া পাসপোর্ট জোগাড় করে!’

তার জীবনে একাধিকবার পোস্ট অফিসের বিয়ের। কিন্তু তার পাশে দাঁড়ানোর প্রস্তাব এসেছে কিন্তু তার মেয়েকে মানুষ করে বড় করে তোলার আশ্বাস কেউ দেয়নি। ‘প্রথম যে দিন শোভনের সঙ্গে থাকতে শুরু করি শোভন বলেছিল, ‘মহুলকে নিয়ে এস” তুই কথাটা মনে দাগ কেটে যায়। তবে অন্যের বাবাকে নিজের বাবা বানানোর প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী নন বৈশাখী।

তাই মেয়েকে তিনি শোভনকে বাবা ডাকতে শেখাননি। সারল্য জড়ানো একরত্তিটি মাকে এক দিন প্রশ্ন করে বসে, ‘শোভনকে কী বলে ডাকব?’ উত্তরে বৈশাখী বলেছিলেন, ‘তুমি যখন শোভনকে ডাকবে তখন ওঁকেই জিজ্ঞেস কর।’ মহুলের প্রশ্নে শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তুমিও দুষ্টুমি কর। আমিও দুষ্টুমি করি।

‘দুষ্টু’ নামেই ডাকো আমাকে।’ এই প্রসঙ্গে বৈশাখী বললেন, ‘শোভনের ছেলে আমাকে এক বার জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তোমার মেয়ে আমার বাবাকে ‘দুষ্টু’ বলে ডাকে কেন? ড্যাড বলে না কেন?’ বৈশাখী বলেছিলেন, ‘ও মহুলের ড্যাড নয়, কেনই বা ডাকবে!’

পিতৃত্ব ফলানোর জন্য প্রাক্তন স্বামী ক্রমশ থাবা বসাচ্ছিলেন মা-মেয়ের জীবনে। ‘মনোজিতের ক্যানসারের চিকিৎসার সময় কিছু দিন মেয়েকে ওর কাছে রেখেছিলাম। মেয়ের প্রতি অন্যায় করেছিলাম,’ আক্ষেপের সুর বৈশাখীর কণ্ঠে। মনোজিতকে এক বার টিভির পর্দায় দেখে মেয়ে ক্ষোভ মিশ্রিত প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিল মাকে, ‘তোমার কি আর কিছু দেখার নেই?’

চাকরি ছেড়ে দিলেও মহুলের পড়াশোনার সব দায়িত্ব নিজেই সামলান বৈশাখী। তবে মায়ের কাছে পড়তে বসতে মেয়ের যত ভয়! বৈশাখীর মতে, ‘ওর বাবা ইংরেজি অধ্যাপক অথচ মেয়ে কোন ক্লাসে পড়ে সেটা জানে না! এ দিকে ‘ভিজ়িটিং রাইট’ ছাড়ছে না!’ মেয়েকে কোনও দিন নিরাপত্তার ঘেরাটোপে রাখেননি বৈশাখী।

আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবনের স্বাদ আস্বাদন করছেন মা-মেয়ে। গড়িয়াহাটে মেয়ের হাত ধরে হাঁটেন অনায়াসে। প্রায়শই একই পোশাকে সেজে ওঠেন মা ও মেয়ে। ‘এই বিষয়ে আমার মেয়ে কিন্তু ট্রেন্ডসেটার!’ হাসি রেখে বললেন বৈশাখী। মায়ের হাতের পায়েস বড়ই প্রিয় ছোট্ট মহুলের।

অতীতের একটি রাতের কথা ভাবলে আজ চোখ ঝাপসা হয়ে আসে বৈশাখীর। মেয়ে তখন গুরুতর অসুস্থ। বাড়িতে নেই মনোজিৎ। যাওয়ার আগে বৈশাখীকে বলেছিলেন, ‘ন্যাকামি করে ফোন করবে না আমাকে!’ কিন্তু শারীরিক কষ্টের কারণে মহুল ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে পড়ছিল। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই ফোনে মেয়ের অসুস্থ হওয়ার খবর জানান তিনি। উত্তরে প্রাক্তন স্বামী বলেন, ‘মেয়ে কি মরে গিয়েছে!’

বৈশাখী মনে করেন, মায়েদের জীবন কষ্টের। শিশু বলে তাঁর মেয়েকে ট্রোলিংয়ের হাত থেকে রেহাই দেয়নি কেউ! মায়ের জীবনে নতুন মানুষ আসায় কখনও ঈর্ষার চোরা স্রোত বয়ে গিয়েছে মেয়ের মনে? 

মা-মেয়ের এই দৃঢ় বন্ধন সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত স্বরূপ। মেয়ের থেকে দূরে থাকতে হলে কী করবেন বৈশাখী? ‘মেয়ে ছেড়ে যেতে চাইলে আমি কখনও আটকাব না,’ মায়ের দীর্ঘশ্বাস। তিনি আর বললেন, ‘মহুল তার মাকে কী ভাবে দেখে সেটা আমি জানি না।

কিন্তু মার সঙ্গে কেউ একটু খারাপ ভাবে কথা বললে মহুলের কাছে সে খারাপ।’ মেয়ের বন্ধুমহলেও প্রিয় বৈশাখী। মা না হলে তিনি বেঁচে থাকতে পারতেন না, এমনটাই বিশ্বাস করেন বৈশাখী। তিনি বললেন, ‘আগের যুগ হলে সমাজ আমাকে পুড়িয়ে মেরে ফেলত।’

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *