
এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণাংশের কেন্দ্রস্থলে ভারতবর্ষ অবস্থিত। এই দেশের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য এতটাই বেশি যে ভারতকে পৃথিবীর একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ বলা হয়। ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ ভারতের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
Table of Contents
Toggleগোলার্ধ ও চারদিকের সীমানার পরিমাপ
ভারত উত্তর গোলার্ধের পূর্ব অংশে অবস্থিত। ভারতের মূল ভূখণ্ড 8°04′ উত্তর অক্ষাংশ (কুমারিকা অন্তরীপ) থেকে 37°06′ উত্তর অক্ষাংশ (ইন্দিরা কল) পর্যন্ত বিস্তৃত। দ্রাঘিমা অনুযায়ী ভারত 68°07′
পূর্ব দ্রাঘিমা (গুজরাটের পশ্চিম সীমা) থেকে 97°25′ পূর্ব দ্রাঘিমা (অরুণাচল প্রদেশের পশ্চিম সীমা) পর্যন্ত বিস্তৃত। এর বিস্তার উত্তর-দক্ষিণে 3124 কিমি. এবং পূর্ব-পশ্চিমে 2933 কিমি.।
দেশের অবস্থানঃ
ভারতের উত্তর সীমায় রয়েছে সুবিশাল হিমালয় পর্বতমালা, চিন, নেপাল ও ভুটান। পূর্ব সীমায় অবস্থান করছে বাংলাদেশ, মায়ানমার ও বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ সীমায় রয়েছে ভারত-মহাসাগর এবং পশ্চিম সীমায় রয়েছে পাকিস্তান ও আরব সাগর। ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে রয়েছে আফগানিস্তান। ভারতের দক্ষিণে তামিলনাড়ুর অনতিদূরে রয়েছে শ্রীলঙ্কা যা পক প্রণালী ও মান্নার উপসাগর দ্বারা মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন।
দ্বীপ এর অবস্থান
ভারতের স্থলসীমার মোট দৈর্ঘ্য প্রায় 15,200 কি.মি. এবং জলসীমার দৈর্ঘ্য (মূল-ভূখণ্ড আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও লাক্ষা-মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জ সহ) 7,517 কি.মি.।
ক্ষেত্রফল
ক্ষেত্রফলের বিচারে ভারত পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম দেশ। আর জনসংখ্যার বিচারে পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ।
চারদিকের শেষ সীমার নাম
ভারতের উত্তরতম স্থান হল জম্মু ও কাশ্মীরের ‘ইন্দিরা কলা, দক্ষিণতম স্থান হল। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ‘ইন্দিরা পয়েন্ট’ বা ‘পিগম্যালিয়ান পয়েন্ট’, পশ্চিমতম স্থান হল গুজরাটের ‘গুহারমোটার’ আর পূর্বতম স্থান হল অরুণাচল প্রদেশের ‘কিবিণু’।
ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি হল- পশ্চিমে পাকিস্তান, উত্তর-পশ্চিমে আফগানিস্তান, উত্তরে চিন, নেপাল, ভুটান, পূর্বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে মালদ্বীপ। এদের মধ্যে চিন বৃহত্তম এবং মালদ্বীপ ক্ষুদ্রতম।
অন্য দেশের সঙ্গে লেগে থাকা সিমানা রেখার নাম
ভারত-আফগানিস্তান সীমারেখা ‘ডুরান্ড লাইন’ (1896) নামে পরিচিত। ভারত-চিন সীমারেখা ম্যাকমোহন লাইন (1914) নামে পরিচিত। ভারত-পাকিস্তান সীমারেখা ‘র্যাডক্লিফ লাইন’ (1947) নামে পরিচিত। ভারত-অধিকৃত কাশ্মীর ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীর-এর মধ্যবর্তী সীমারেখা ‘লাইন অফ কন্ট্রোল’নামে পরিচিত। ভারত-অধিকৃত ও চিন অধিকৃত কাশ্মীর ‘লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল’ নামে পরিচিত।
স্বাধীনতা ও রাজ্যভাগ
1947 সালের 15 আগস্ট দেশ বিভাগের সময় ভারতে 550 টিরও বেশি করদ রাজ্য ছিল। তারপর 1950 সালের 7 জানুয়ারির আগে দেশে ছিল 28 টি অঙ্গরাজ্য ও 1 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। 1953 সালে ভারতে ‘রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন’ স্থাপিত হয়। এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ভারতকে 14 টি রাজ্য এবং 1 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়। এই রাজ্য পুনর্গঠনের প্রধান ভিত্তি ছিল ‘ভাষা’। বর্তমানে ভারতে 29 টি অঙ্গরাজ এবং 7 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে।
কোন রাজ্য কোন সময় গঠিত হয়
1960 সালে বোম্বাই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গুজরাট ও মহারাষ্ট্র রাজ্য গঠিত হয়; 1969 সালে পূর্বতন আসাম রাজ্য দুইভাগে বিভক্ত হয়ে সৃষ্টি হয় অসম ও মেঘালয়; 1964 সালে নাগাল্যান্ড, 1970 সালে হিমাচল প্রদেশ আর 1987 সালে গোয়া পূর্ণাঙ্গ রাজ্যে পরিণত হয়। 2001 সালের 1 নভেম্বর মধ্যপ্রদেশের পূর্বাংশ নিয়ে গঠিত হয় ছত্তিশগড়, 9 নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের উত্তরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় উত্তরাখণ্ড আর 15 নভেম্বর বিহারের দক্ষিণাংশ নিয়ে গঠিত হয় ঝাড়খণ্ড রাজ্য। 2014 সালের 2 জুন অন্ধ প্রদেশের উত্তরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় তেলেঙ্গানা রাজ্য। ইহাই ভারতের নবীনতম অঙ্গরাজ্য
বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম অবস্থান
ভারতের বৃহত্তম রাজ্য রাজস্থান, ক্ষুদ্রতম রাজ্য গোয়া, বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষা ও মিনিকয় দ্বীপপুঞ্জ। গুজরাটের কচ্ছ দেশের বৃহত্তম জেলা এবং কেরালার মাহে দেশের ক্ষুদ্রতম জেলা। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমারেখার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি।
বি দ্রঃ আমাদের প্রতিবেদন আপনদের আবগতির জন্য তাই আমাদের সাথে নিচে দেওয়া লিঙ্ক এ যুক্ত হন , ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ | Join Group |
আমাদের টেলিগ্রাম | Join Here |