
বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে স্বাস্থ্যের দিকে একবারই নজর দেওয়া হয় না , তাই আমাদেরকে প্রতিনিয়ত নানা রকম রোগে ভুগতেই হয় , আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার নানা রকমের খাওয়া দাওয়া আমাদের শরীরের মেদকে বাড়িয়ে দেয় অতিরিক্ত মেদ বাড়লে শরীরের নানা রকম রোগের জন্ম হয় , তাই যারা মেদকেই খুব সহজেই কমাতে চান অবশ্যই তাদের জন্যই পোস্টটি
Table of Contents
Toggleওজন কমানোর উপায় ( How to make slim body) :
১. লেবু :
গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণে জল পান করার ফলে বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধি পাই এবং দ্রুত ওজন কমে।সেক্ষেত্রে লেবু-জল বেছে নিতে পারেন। লেবু জল একটি জনপ্রিয় স্বাস্থ্য পানীয় যা প্রায়শই সকালে খালি পেটে খাওয়া হয়।গরম জলে পাতিলেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে খেলে ওজন কমে। সকালবেলা খালি পেটে এই পানীয় খেতে পারেন।
তবে চিনি বা মিষ্টি কিছু মিশিয়ে খাওয়া যাবে না। তবে ১ কাপ সমপরিমাণ জলে অর্ধেক পরিমাণ লেবু মিশিয়ে খেতে পারেন।এটি ওজন কমানোর পাশাপাশি বিপাকক্রিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, হজমশক্তি ভাল করতে এবং মেটাবলিজম রেট বাড়াতে সাহায্য করে লেবু-মধু মেশানো গরম জল।
ওজন কমানোর পাশাপাশি এর অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। লেবুতে আছে ভিটামিন সি ,যা দৈনিক প্রয়োজনীয়তার ৬৪% সরবরাহ করে। ভিটামিন সি ছাড়াও, লেবুতে অন্যান্য আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন: ফ্রুক্টোজ, ফাইবার, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং তামা, সেইসাথে আরো রয়েছে ভিটামিন বি 1, বি 2, বি 6, ফোলেট এবং প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড।
লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।ভিটামিন সি-এর অভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের যে স্কার্ভি রোগ হয় সেটিও প্রতিরোধ করে এই লেবু।
২.গ্রিন-টি:
গ্রিন টি গ্রিন টি ওজন কমাতে খুবই সহায়ক একটি পানীয়। সবচেয়ে বেশি উপকার পেতে হলে কোনও ভারী খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে কিংবা ২ ঘণ্টা পরে গ্রিন টি খেতে পারেন। গ্রিন টির মধ্যে থাকা পলিফেনল চর্বি জারণ বা ফ্যাট অক্সিডেশন হওয়ার প্রক্রিয়াকে ভালো করে।এই চায়ে ক্যাফিন ও ক্যাটেচিন ভাল মাত্রায় থাকে আর এই যৌগগুলি শরীরের বিপাকীয় হার বাড়ায়। বিপাকীয় হার বাড়লে ওজন দ্রুত কমে।
এছাড়া গ্রিন টিতে আছে ক্যাটাচিন নামক উপাদান, যা শরীরের বিভিন্ন উপকার করে এবং পেটের মেদ কমাতেও ভূমিকা রাখে।নিয়মিত গ্রিন টি পানে ধমনী শিথিল হয় এবং দেহে রক্ত প্রবাহের মাত্রা ভালো থাকে।গ্রিন টি খেলে শরীরের মেদ কোষে বেশি শর্করা ঢুকতে পারে না। শুধু তাই নয় এর আরো অনেক উপকারিতা আছে সেগুলি হলো গ্রিন টিতে থাকা থিয়ানিন নামক অ্যামাইনো এসিড অবসাদ বা ডিপ্রেশন কমাতে ভূমিকা রাখে।সবুজ চায়ের লিকার দাঁতের ক্ষয় রোধ করে এবং মাড়িকে মজবুত করে তোলে।
মস্তিষ্কের স্মৃতি শক্তির উন্নতি ঘটাতে গ্রিন টির উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ , অর্থাৎ সোজা ভাষায় বলতে গেলে গ্রিন টির কিছু উপাদান মানুষের বুদ্ধির বিকাশ ঘটায় ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায় , এছাড়াও যে সমস্ত ডায়াবেটিসের রোগী রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত ইনসুলিন ব্যবহার করে তাদের জন্যও গ্রিন টি খাদ্য তালিকায় একটি কার্যকরী উপাদান ।
সূর্যের অতিরিক্ত বেগনি রশ্মির কারণে আমাদের ত্বকের যে কোষগুলি পুড়ে যায় সেই কোষগুলিকে পুনর্জীবিত করতে গ্রীনটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ অর্থাৎ সোজা কথা বলতে গেলে সূর্যের অতিরিক্ত তাপ থেকে ত্বককে রক্ষা করে ।
৩. ব্যায়াম:
একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য অনুসরণ করার পাশাপাশি, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপে নিযুক্ত করা অপরিহার্য।ব্যায়াম সহ বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করে আপনি ওজন কমাতে পারেন। প্রত্যেকদিন বাড়িতে ব্যায়াম করে ওজন কমানো সুবিধাজনক, কারণ এতে কোন বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই ।
প্রত্যহ ওয়ার্কআউট করলে মেটাবলিজম বাড়ায় এবং চর্বি কমাতে সহায়তা করে ক্যালোরি বার্ন করে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে 30 মিনিটের ব্যায়ামের লক্ষ্য রাখতে হবে, যেমন হাঁটা, জগিং, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা।এইগুলোর পাশাপাশি ওজন কমাতে আপনি নিয়মিত যোগ ব্যায়ামও করতে পারেন যেমন-ভুজঙ্গাসন,ধনুরাসন,সেতুবন্ধ আসন।
৪. প্রোটিনযুক্ত খাবার:
প্রোটিনযুক্ত খাওয়ার আপনার শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তার কারণ হল প্রোটিন খাওয়ার ফলে আপনি পূর্ণ বোধ করেন এবং বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
৫.ফাইবারযুক্ত খাবার:
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই দ্রুত ওজন কমাতে ফাইবার সমৃদ্ধ লেবু, গোটা শস্য, বীজ, বাদাম, উচ্চ আঁশযুক্ত ফল ও শাকসবজি ইত্যাদি খাবার খান
৬. ফাস্টফুড পরিত্যাগঃ
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিনিয়ত ফাস্টফুডের দিকে ঝোক বেশি , বিশেষ করে অল্প বয়স থেকেই ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ধরনের ফাস্টফুডের দিকে চোখ বেশি হয় , , এই ফাস্টফুড শরীরের চর্বি খুব তাড়াতাড়ি বাড়িয়ে দেয়। তাই খাবারের রুটিন থেকে ফাস্ট ফুড ত্যাগ করুন ।
এছাড়া আরো যেগুলো মেনে চলবেন সেগুলো হলো পর্যাপ্ত ঘুম, জল পান, চিনি পরিহার, প্রতিদিন খাবারের সময় নির্দিষ্ট রাখুন …
আরো পড়ুনঃ