
Which dry fruit is best during pregnancy? গর্ভাবস্থা হল এমন একটা সময় যখন আপনার উচিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যের উপর দৃষ্টিপাত করা। প্রত্যেক মহিলা বা মায়ের জীবনে গর্ভাবস্থা একটা অদ্ভুত অনূভুতির সৃষ্টি করে। এইসময় প্রত্যেক মহিলাই অত্যন্ত ধীর, স্থির ও সচেতনশীল হয়ে ওঠেন।গর্ভাবস্থায় অন্যান্য সবদিকে খেয়াল রাখার পাশাপাশি নিজের খাদ্যের দিকে সবথেকে বেশি খেয়াল রাখা উচিত।
এইসময় স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা ভীষণ আবশ্যক ।আপনার সন্তানের প্রতিপালনের জন্য আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টির সঠিক মাত্রা বজায় রাখার জন্য একটি সুষম খাদ্য গ্রহণ করা হল সবচেয়ে ভাল উপায়,যাতে মা ও সন্তান উভয়েই সুস্থ থাকে।
মা এবং সন্তান উভয়ের স্বাস্থ্যের উপকারিতার জন্য গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য-তালিকায় ড্রাই ফ্রুটস রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।এখানে এমন কিছু নির্দিষ্ট খাবার উল্লেখ করা হল যেগুলি এই সময়ে খাওয়া উচিত।
Table of Contents
Toggleগর্ভাবস্থায় পাঁচটি চমৎকার কারি ড্রাই ফুড:
1.আখরোট:
আখরোট আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।গর্ভাবস্থায় এই আখরোটের গুরুত্ব অনেক।এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।আখরোট ওমেগা 3 ও ফ্যাটি অ্যাসিডের সমৃদ্ধ ।এটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়,স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি করে,অনাক্রম্যতা এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল স্বাস্থ্যকে উন্নত করে ।

এছাড়া আখরোট রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার হ্রাস করে।আখরোটে অনেক খনিজ পদার্থ রয়েছে যা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য উপকারী যেমন-ম্যাগনেসিয়াম।এই ম্যাগনেসিয়াম শিশুর হাড় ও তরুণাস্থির যথাযথ বিকাশ ও মজবুত করতে ভীষণ সাহায্য করে।আখরোট ভ্রূণের মস্তিষ্ক এবং চোখের বিকাশ সাধন করে।
2.কাঠ বাদাম বা আমণ্ড:
কাঠ বাদাম বা আমণ্ড সকলের জনই খুব উপকারী।বিশেষকরে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এটি খুব উপযোগী।কাঠ বাদামে ম্যাগনেসিয়াম, রাইবোফ্লাভিন এবং ফোলেট (ভিটামিন B-9) উপস্থিত থাকে যা মস্তিষ্কের সঠিক ক্রিয়াকলাপের পাশাপাশি স্নায়ুতন্ত্র বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া আমণ্ড মধ্যস্থ ফাইবার বা তন্তু সঠিক হজমের জন্য অপরিহার্য ।এতে উপস্থিত ভিটামিন E চুল এবং ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখে।এছাড়াও এটি মায়ের শরীরের মাধ্যমে শিশুর কাছে অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা করে এবং এটি গর্ভবতী মহিলাদের ক্লান্তির সাথে লড়াই করতেও সহায়তা করে।
কাঠ বাদামে থাকা আয়রন ভ্রূণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং হার্টের বিকাশে সাহায্য করে। কাঠ বাদামে উপস্থিত ম্যাঙ্গানিজ মা এবং শিশু উভয়ের দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।এছাড়া কাঠ বাদামে থাকা ম্যাগনেসিয়াম শিশুর হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
3.খেজুর:
খেজুর খুব সুস্বাদু এবং ভীষণ উপকারী একটি ফল। গর্ভাবস্থায় এটি ভীষণ উপকারী।শুকনো খেজুর হল পুষ্টির একটি উৎকৃষ্ট উৎস। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ উপাদান , কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমানে ক্যালোরি পাওয়া যায়।এটি আপনার পাচনতন্ত্রের উপকার করে।
গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা হল কোষ্ঠকাঠিন্য।খেজুরে ফাইবার থাকে, যা হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে, । এছাড়া ফাইবারনিয়মিত অন্ত্রের গতিবিধি বজায় রাখতে এবং সর্বোত্তম হজম স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করতে পারে।খেজুরে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুস্থ হৃদয় এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
4.কাজু বাদাম:
প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরা একটি সুস্বাদু ড্রাই ফুড হলো কাজুবাদাম । ভিটামিন সি শরীরে অতিরিক্ত মাত্রায় দরকার , যা কাজু বাদামে ভরপুর , তাই চিকিৎসকরা কাজুবাদাম কে প্রাকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেট নাম দিয়েছেন। নিয়মিত যদি ৩-৪টি কাজু বাদাম খাওয়া যায় তাহলে শরীরে নানা পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।গর্ভাবস্থায় এটি ভীষণ উপকারী।গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলার পক্ষে একটি কঠিন সময় হতে পারে, তবে কাজু বাদাম খাওয়া তাত্ক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে।
এছাড়া কাজুতে রয়েছে ভিটামিন কে, মিনারেলস, ভিটামিন বি৬ এর মতো কার্যকরী উপাদান। যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে পেশির ব্যথা, যন্ত্রণাও উপশম করে।এটি আয়রনের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে। কাজু বাদামে থাকা উচ্চ ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।কাজু বাদামের অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।
কাজু বাদাম ম্যাগনেসিয়ামের সমৃদ্ধ উত্স, যা ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। এগুলি পেশীর কোষ, উচ্চ রক্তচাপ, ক্লান্তি এবং মাইগ্রেন থেকে মুক্তি দেয়।কাজু বাদাম গর্ভাবস্থায় মাড়ি এবং দাঁতের ক্ষয় রোধ করে।
কাজু বাদাম লিপিড প্রোফাইলের মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে।কাজু বাদামে আপনার শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশেরজন প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি সরবরাহ করবে।
5.কিশমিশ:
অন্যান্য ড্রাই ফ্রুটের মধ্যে কিশমিশ সবচেয়ে জনপ্রিয়। এটি খুব স্বাস্থ্যকর। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য দুর্দান্ত উপকারী। কিশমিশ শক্তি যোগায়। কিশমিশে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফেনোলিক যৌগ থাকায় কোষের ক্ষতি এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে কোষকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।এছাড়া কিশমিশে থাকা আয়রণ, রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, হৃদযন্ত্রের সু–স্বাস্থ্য বজায় রাখে।গর্ভবস্তায় একটি পরিচিত সমস্যা হল কোষ্ঠকাঠিন্য কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকাই এটি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে এবং দেহের মধ্যে পাচন ক্রিয়াকে উন্নত করে এবং হজমে সহায়তা করে।
গর্ভবতী হওয়ার পর আপনার দেহ প্রচুর ট্রমার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয় এবং দেহে অসংখ্য পরিবর্তন হয়ে থাকে, যা আপনার দেহের মধ্যে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে।
কিন্তু কিশমিশ আপনার দেহে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করতে পারে, যা দেহের মধ্যে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে এবং রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোধ করে। আপনার দেহের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খনিজ হল ক্যালসিয়াম।এই খনিজটি হাড়ের স্বাস্থ্য, দাঁতের স্বাস্থ্য, কোলেস্টেরল বিশোষণ, ত্বকের স্বাস্থ্য এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিকমত বজায় রাখতে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।এটি গর্ভে শিশুর হাড়ের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিশুর হাড়ের ঘনত্ব স্বাভাবিক রাখে এবং যথাযথ ভাবে বিকাশ হওয়াকে নিশ্চিত করে।