Centella asiatica
Centella asiatica

Centella asiatica medicinal uses: থানকুনি পাতার উপকারিতা

Centella asiatica
Centella asiatica

Centella asiatica medicinal uses: আমাদের দেশে থানকুনি ভীষণ পরিচিত একটি ভেষজ গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ। এর ল্যাটিন নাম সেন্টালা আকিয়াটিকা।

থানকুনি পাতা আমাদের দেশের প্রায় সব জায়গায় যেমন-ক্ষেতের ধারে, পুকুর পাড়ে কিংবা ডোবার পাশে পাওয়া যায়। রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে থানকুনি পাতার অবদান অপরিসীম।

শরীরকে সুস্থ রাখতে এই পাতার জুড়ি মেলা ভার।এই পাতার মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয়। ক্ষত সারাতে, পেটের অসুখ ভালো করতে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে এমনকি সৌন্দর্যচর্চায় প্রাচীনকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই থানকুনি পাতা।১৭ শতক থেকেই এই পাতা আফ্রিকা, জাভা, সুমাত্রা প্রভৃতি স্থানে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।

অঞ্চলভেদে এই পাতাকে বহু নামে ডাকা হয় যেমন-টেয়া, মানকি, তিতুরা, মানামানি,ধূলাবেগুন,থানকুনি, আদামনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি ইত্যাদি।

থানকুনি পাতার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হল-

হজমশক্তি বৃদ্ধি:

হজমের সমস্যায় ভুগছেন?তাহলে তাজা থানকুনি পাতা সামান্য একটু লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিয়মিত পান করুন। এই পাতা হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই পাতার বেশ কিছু উপাদান হজমের সহায়ক অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ফলে বদ হজমের সমস্যা অনেককাংশেই কমে।এছাড়া বেগুনকিংবা পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুক্তো রান্না করে বুশ কিছুদিন খান এতে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।

ঘুম ভালো হয়

আমাদের অজান্তেই ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীর একাধিক কাজ সেরে ফেলে।সেইজন্য প্রত্যেকের অন্তত পক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম ভীষণ জরুরি। তা নাহলে দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠা থেকে অবসাদের মতো মানসিক সমস্যার হতে পারে।এই সমস্যা সমাধানের জন্য খেতে পারেন থানকুনি পাতা। কারণ থানকুনি পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি (প্রদাহনাশক) উপাদান মানসিক চাপ কমায় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে ।ফলে স্নায়ু শিথিল হয় এবং অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়।

মানসিক অবসাদ দূর করে:

প্রায় সবসময় মন ‘ভালো’ না থাকার সমস্যাকেই বিজ্ঞানের ভাষায় অবসাদ বলা হয়।নিত্যদিনের কাজের চাপ ও ব‌ক্তিগত জীবনের নানান সমস্যা থেকে অনেক সময় মানসিক চাপ তৈরি হয়।মানসিক অবসাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা প্রথমেই সমাধান না করলে একাকিত্ব, কাজে অনীহা, অনিদ্রা থেকে শুরু করে একাধিক জটিল সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকী এই রোগের ক্ষেত্রে রোগীর আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা দেয়। ঘরোয়া পদ্ধতিতে
এই মানসিক অবসাদ দূর করার জন্য কার্যকর ভেষজ হলো থানকুনি পাতা।থানকুনি পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এটি স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে তাই মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা কমে এবং
অ্যাংজাইটির আশঙ্কা থেকে রেহাই পেতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:

থানকুনি পাতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভীষণ কার্যকরী । কারণ এই পাতায় প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘সি’ থাকে যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শুধু তাই নয় এটি মুখের ঘা দূর করতে, সর্দি কাশি ভালো করতে এবং পেটের অসুখ ভালো করতেও এটি বেশ কার্যকর।
তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে থানকুনি পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এমনকি এটি শিশুকেও খাওয়ানো উপকারী।

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে থানকুনি পাতা খুব উপকারী। রোজ থানকুনি পাতা খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস নামের উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পাই।ফলস্বরূপ মস্তিষ্কের কোষগুলি আরও ভালোভাবে কাজ করে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত হয় ।অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগের ক্ষেত্রে স্মৃতি শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।থানকুনি পাতা এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্কের নার্ভের ফাংশন ও মেমোরি ফাংশন ভালো রাখে। ফলে ব্রেনসেল চমৎকারভাবে কাজ করে এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতির সাথে সাথে তীক্ষ্ণ বুদ্ধির উদয় হয়।

সর্দি কাশি কমাতে:

সর্দি কাশি কমাতে থানকুনি পাতা খুব ভালো কাজ করে।শীতকালে ঠান্ডার সমস্যা বেশি হয়। তাই এসময় থানকুনি পাতা ভীষণ উপকারী । তবে থানকুনি পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কাশি কমে এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য অসুখ ভালো হয়। এছাড়া থানকুনি পাতার সাথে তুলসি এবং গোল মরিচ দিয়ে খেলে তা ঠান্ডা এবং জ্বর ভালো করতে সাহায্য করে। কাশি ও গলা ব্যথার সমস্যা সমাধানের জন্য, থানকুনি পাতার রসের সাথে অল্প একটু চিনি মিশিয়ে পান করুন। এক সপ্তাহ এটি খেলে কাশি একদম সেরে যাবে।

আলসার দূর করে:

থানকুনি পাতা পেটের যে কোনো রোগ প্রতিরোধে খুব কার্যকরী। ঘরোয়া পদ্ধতিতে গ্যাসের সমস্যা কমাতে এই পাতা ভীষণ কাজের।আলসার থেকে আমাশয় এর মতো সমস্যা ভালো হয় থানকুনি পাতায়। আধ লিটার দুধ , সামান্য পরিমানে থানকুনি পাতার রস এবং ২৫০ গ্রাম মিছরি একত্রে মিশিয়ে মিশ্রন তৈরি করে সেটি ১ সপ্তাহ প্রত্যেকদিন সকালে একটু একটু করে খেলে খুব দ্রুত উপকার পাওয়া যাবে।

আমাদের এমবাংলায় বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে টিপস ও আপডেট খবর পেতে অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগদান করুন। 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *