
Health benefits of curd: এই গরমে এমনিতেই মানুষ ক্লান্ত হয়ে পরে তারউপর একটানা কাজের চাপ,অবসাদ বা মানসিক উদ্বেগ আমাদের আরো ক্লান্ত করে দেয়। অনেক সময় তা থেকে ঠিকমতো খিদেও আসে না। গরমে জলশূন্যতা, হিটস্ট্রোকের মতো সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।
তাই এ সময় শরীর আর্দ্র ও ঠান্ডা রাখা প্রয়োজন।সেইজন্য এ সময় চাহিদামাফিক বিশুদ্ধ জল বেশি করে পান করতে হবে যাতে শরীরে জলের ঘাটতি না থাকে।শরীর ভালো রাখতে অনেক খাবারই গরমে খেতে বলা হয় এর মধ্যে রয়েছে তরমুজ, শসা, ডাবের জল, কমলা, জলসমৃদ্ধ সবজি ইত্যাদি। এগুলো শরীরকে ঠান্ডা ও শিথিল রাখে।
তবে এগুলো ছাড়াও গরমের সময় দই খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে।এটি মুড ভালো রাখতেও ভীষণ সাহায্য করে। তাই যদি দুধ খেতে ভালো না লাগে তাহলে দই খেতে পারেন। এতে দুধের মতোই পুষ্টি থাকে। এছাড়া দইয়ের মধ্যে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।তবে দিনে ৩০০-৫০০ গ্রাম দই খাওয়া ভালো , তার থেকে বেশি না খাওয়াই গ্রহণযোগ্য,এর থেকে বেশি পরিমাণে খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়াতে পারে।তাই যেকোনো খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এবং শরীরের অবস্থা বুঝে খান।
Table of Contents
Toggleআসুন জেনে নিই দইয়ের স্বাস্থ্য উপকারিতা সমন্ধে–
পেট পরিষ্কার রাখে:
এই গরমে পেটের সমস্যা হতেই থাকে, খাবার খেয়েও হজম হয়না তাই গরমে পেট ঠাণ্ডা রাখতে দইয়ের জুড়ি মেলা ভার। দুপুর বেলা খাবার খাওয়ার পরে দই খেলে খাবার ঠিকমতো হজম হয়। কারণ দইয়ে থাকা ল্যাক্টোব্যাসিলাস ভালো ব্যাক্টেরিয়াকে উদ্দীপিত করে ফলে খাবার হজম হয় ও পেট ঠান্ডা থাকে।তাই চিকিৎসকরা দই খাওয়ার পরামর্শ দেন ।শুধু খাবার হজম করা নয় দই গরমে পেট ঠাণ্ডা রাখে এবং পেট পরিষ্কার রাখে। এছাড়া দই ডায়রিয়া ও কনস্টিপেশনের সমস্যা কমায়।
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রন রাখেঃ
গরমে দই খেতে পারেন পাশাপাশি দইয়ের ঘোল, রায়তা ইত্যাদিও খেতে পারেন এতে আপনার ক্ষিদেও মিটবে আর ওজন ও বাড়বে না কারণ দইয়ে ক্যালোরি, ফ্যাট কম থাকে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে টক দই বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।টক দই ৬১% ফ্যাট বার্ন করতে এবং ২২% সামগ্রিক ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু এর জন্য আপনাকে সঠিক উপায়ে দই খেতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি টক দইয়ের সঙ্গে ভাজা জিরে ও জোয়ান মিশিয়ে খেলে কয়েকদিনের মধ্যে ওজন ঝরিয়ে ফেলতে পারেন।
ভিটামিন ও খনিজের চাহিদা মেটায়ঃ
দইয়ে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিন বি ১২, বি২, ভিটামিন ডি,পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম জিংক ও ফসফরাস থাকে। দইয়ের ব্যাক্টেরিয়া শরীরে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স শোষণ করতে সাহায্য করে এবং ভিটামিন বি-১২ রক্তকোষ গঠনে সাহায্য করে। দইয়ে থাকা ম্যাগনেশিয়াম, সেলেনিয়াম ও জিঙ্ক ইমিউনিটি বাড়ায়।
এককথায় বলতে গেলে আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দইয়ের বিকল্প নেই।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনেঃ
দইয়ে কোলেস্টেরল কম থাকে বিশেষ করে দই শরীরে বাজে কোলেস্টেরল হওয়া প্রতিরোধ করে ফলে হৃৎপিণ্ডকে ভালো থাকে এবং এটি রক্তচাপকেও ঠিকঠাক রাখতে সাহায্য করে।
দেহের ব্যাক্টেরিয়া নিঃসরণেঃ
দইয়ের ক্যালসিয়াম কোলনের কোষগুলো অস্বাভাবিক বৃদ্ধি রোধ করে। দই অন্ত্রেও উপকারী ব্যাক্টেরিয়া নিঃসরণ করে । যা রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে,অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।কোলাইটিস রোগে ক্ষেত্রে দই খুবই উপকারী।
হাড়ের গঠনঃ
শিশু ও বয়স্কদের জন্য দই খাওয়া খুব উপকারী হাড়ের গঠনে এবং হাড় মজবুত করতে টক দই খুব কার্যকর। এটি হাড় ও দাঁতকে ভালো রাখে ।এছাড়া এটি হাড়ে অসুখ অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধে বিশেষভাবে সাহায্য করে ।
রোগ প্রতিরোধ এঃ
এই গরমে শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত দই খেতে পারেন। কারণ দই প্রেমাচিওর এজিং, জন্ডিস, হেপাটাইটিস রোধ করাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
প্রোটিনঃ
দইয়ে রয়েছে প্রাণিজ প্রোটিন। দইয়ে থাকে অত্যাবশ্যক অ্যামিনো অ্যাসিড। দুধের প্রোটিন থেকে দইয়ের প্রোটিন সহজে হজম হয়।
সুন্দর ত্বকেঃ
সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর ত্বক পেতে দই খেতে পারেন। দইয়ে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে, যা একটি মৃদু এক্সফোলিয়েন্ট যা মৃত ত্বক অপসারণ করতে খুব সাহায্য করে। এছাড়া এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য ত্বকে ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে।দই প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসাবে কাজ করে এবং ত্বক আর্দ্র ও কোমল করে তোলে।
চুলের যত্নেঃ
চুল ভালো রাখতে টক দই বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে। চুলের উপর দই প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের মতোই কাজ করে।দইয়ের ফ্যাট আর ল্যাকটিক অ্যাসিড চুলে আর্দ্রতা জোগায় এবং চুল নরম আর মসৃণ রাখতে সাহায্য করে।দইয়ে থাকা প্রোটিন এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগায় এবং চুলের বৃদ্ধিকে তরান্বিত করে।
দই স্ক্যাল্পের পিএইচ ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং স্ক্যাল্পের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।এছাড়া এটি স্ক্যাল্পে খুশকির সমস্যা, মাথার চুলকুনি, জ্বালাভাব কমায়
এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।