
Tulsi leaf (তুলসি পাতা):
কমবেশি সকলেরই জানা তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে কিন্তু তুলসী পাতাকে কিভাবে ব্যবহার করবে বা তুলসী পাতা কিভাবে খেতে হবে সে কথা অনেকেরই অজানা। তুলসী পাতার প্রচুর গুনাগুন রয়েছে , আজকে সেই গুনাগুন গুলি আপনাদের কাছে তুলে ধরব । ওষুধ হিসেবে তুলসিপাতার ব্যবহার বহু পুরোনো। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন একটি করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া উচিত এমনটাই জানাচ্ছে বিশেষজ্ঞরা।
এই পাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, মারাত্মক সব রোগ যেমন ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, বদহজম ,হৃদরোগ ইত্যদির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এছাড়া শিশু থেকে বয়স্ক যেকোনো বয়সের মানুষেরই ঠান্ডা, সর্দি-কাশি ভালো করতে তুলসী পাতা মহৌষধ।
শুধু তাই নয় এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমাতে এবং শরীরের কর্টিসোলের মাত্রা কমাতে ভীষণভাবে সহায়তা করে।তুলসীপাতা নানা গুণে সমৃদ্ধ বলেই হাজার বছর ধরে ওষুধের তালিকায় রয়েছে এটি । তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক তুলসি পাতার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
Table of Contents
Toggle1.সর্দি-কাশি কমিয়ে দেয়:
ঠান্ডা লাগলে অর্থাৎ সর্দি-কাশি হলে তুলসি পাতা হল মহৌষধ। সর্দি ও কাশি ঠিক করতে এটি খুব দ্রুত কাজ করে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক ,যেকোনো বয়সের মানুষের ঠান্ডা, সর্দি-কাশি কমাতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।কারও বুকে কফ বসে গেলে প্রতিদিন সকালে আদা চা পাতা এবং তুলসি পাতাকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে খেলে উপশম মিলবে। এছাড়া ঠান্ডা লাগলে মাথা ব্যথা হয় এই মাথাব্যথা কমাতে তুলসীর চা খুব কার্যকরী।
2.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
তুলসি পাতা ,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে তাই প্রতিদিন তুলসি পাতা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়া অ্যাজমা, ফুসফুসের সমস্যা, ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি ভালো করতেও সাহায্য করে এই পাতা। তুলসি পাতা ও এলাচ জলে ভালো করে ফুটিয়ে সেই জল পান করলে খুব সহজেই বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এছাড়া ক্ষতস্থানে তুলসি পাতা পেস্ট করে লাগালে ক্ষত দ্রুত শুকিয়ে যায়।
3.নিম্ন রক্তচাপ:
তুলসি পাতায় থাকা অতিরিক্ত পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট নার্ভকে শান্ত করে শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।সেইজন্য কারও নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তুলসি পাতা প্রত্যহ না খাওয়াই ভালো। তবে এর অনন্য সব উপকারিতার জন্য আপনি নিয়মিত তুলসি পাতা খেতে পারেন।
4.গলা ব্যথা দূর করে:
গলা ব্যথার সমস্যা দূর করতেও তুলসি পাতা ভীষণ উপকারী। এই সমস্যা ভালো করতে তুলসি পাতার জুড়ি মেলা ভার। শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতেও তুলসি পাতা ভীষণই উপকারী। কয়েকটি তুলসি পাতা ফুটিয়ে সেই ফোটানো জল দিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা খুব তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
5.ওজন কমায়:
তুলসি পাতা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এটি ক্যালোরি বার্ন করতে এবং প্রাকৃতিকভাবে টক্সিন দূর করতে শরীরকে সাহায্য করে ফলে খুব সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।সকালে জলের সঙ্গে পাঁচ থেকে ছয়টি তুলসি পাতা খেলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়া তুলসি পাতা রক্তে সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টরল দুটোই নিয়ন্ত্রণে রাখে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, তুলসি দিয়ে তৈরি ২৫০ মিলিগ্রামের একটি ক্যাপসুল যদি প্রত্যহ খাওয়ার হয় তাহলে ওবেসিটি ও লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে যেকোনো ধরনের ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
6.ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:
ক্যান্সার এক মরণঘাতি অসুখ,এই অসুখের নাম শোনামাত্র মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। আপনি জানলে অবাক হবেন এই মরণ অসুখ দূরে রাখতেও সাহায্য করে তুলসি পাতা। এই পাতায় রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় এতে আরও আছে ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক এসিড, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন,এসব উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। অগ্নাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয় সেটি ভালো করতেও তুলসী পাতা দারুণ উপকারী। পাশাপাশি তুলসি পাতা ব্রেস্ট ক্যান্সারও ভালো করে।
7.ডায়াবেটিস দূরে রাখে:
তুলসি পাতা ইনসুলিন উৎপাদনের সাহায্য করে। তাই রোজ খাওয়ার আগে তুলসি পাতা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়। অ্যান্টি ডায়াবেটিক ওষুধ তৈরি করতে তুলসি পাতা লাগে। তুলসিতে থাকা স্যাপোনিন, ত্রিতারপিনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড ডায়বেটিস রোধ করতে ভীষণভাবে কার্যকরী।